1. admin@dainikmanobadhikarsangbad.com : admin :
গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর - দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ
১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| বৃহস্পতিবার| সন্ধ্যা ৭:৪৮|

গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্কঃ
  • Update Time : বুধবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২,
  • 300 Time View

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন একটি নিরাপদ ও উপযুক্ত বাসস্থান প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার।

তিনি গৃহহীনতার অভিশাপ দূর করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গৃহহীনতা সত্যিই একটি অভিশাপ। এটি উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, এই অভিশাপ দূর করার বিষয়টি আমাদের সামর্থ্যের মধ্যেই রয়েছে। এখানে সমবেত হওয়া আমাদের সব বন্ধু ও অংশীদাররা এর বাস্তবায়নে একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারেন। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘টেকসই ও সাশ্রয়ী আবাসন’ বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

তিনি বলেন, নিউ আরবান এজেন্ডা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দরকারি নীলনকশা প্রদান করে। এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তাকারী দেশগুলোতে আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘ (ইউএন) হাবিট্যাটসকে সমর্থন দিতে হবে। বাংলাদেশ এই বিষয়গুলো সামনে আনতে নিউইয়র্কে বন্ধুমহলের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। আসুন আমরা এমন একটি বিশ্বের জন্যে কাজ করি- যেখানে গৃহহীনতা অতীত হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সাড়ে ষোল কোটির একটি জনবহুল দেশ হয়েও বাংলাদেশ গৃহহীনতার বিষয়টি সফলভাবে সমাধান করতে পেরেছে। আমরা গৃহহীন-ভূমিহীন লোকজনকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর দিয়েছি। আমি আজ এখানে এসেছি সারা দেশে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্যে টেকসই ঘর নির্মাণে আমার সাফল্যের অভিজ্ঞতাগুলো বিনিময় করতে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নয়নের অগ্রাধিকার হিসেবে ভূমিহীন, গৃহহীন ও শিকড়হীন মানুষকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। জাতির পিতার স্বপ্নের কথা বিবেচনা করে ১৯৯৭ সালে তার সরকার ‘আশ্রয়ণ’ নামে একটি প্রকল্প চালু করে, যার ফলাফল ভূমিহীন ও আশ্রয়হীনদের জন্যে আবাসন। গত দুই দশকে তার সরকার সবার জন্যে বিনামূল্যে আবাসন নিশ্চিত করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। বাংলাদেশের এই কাভারেজ এলাকা কেবল নগরে নয়, দেশের প্রতিটি গ্রাম, শহর, জেলা, দ্বীপ ও পার্বত্য অঞ্চলে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই প্রচেষ্টা আরও ব্যাপকভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। কেবল গত দু’বছরেই দুই লাখ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১০ লাখ লোক আশ্রয় পেয়েছেন। গত ১৮ বছরে আমরা পাঁচ লাখেরও বেশি ঘরে ৩৫ লাখ গৃহহীন লোকের থাকার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়াও আরও ৪০ হাজার ঘর নির্মাণ কাজ চলছে।

তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি পরিবার চারশ’ স্কয়ার ফিট আয়তনের দুই বেডরুম, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি স্যানিটারি ল্যাট্রিনসহ ইটের তৈরি একটি বাড়ির মালিকানা পাচ্ছেন। আমরা প্রত্যেক বাড়িতে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করছি, যা ইতিহাসে অনন্য।
এসব বাড়ির সুবিধাভোগীরা হলেন- ভূমিহীন-গৃহহীন, ভিক্ষুক, দিনমজুর, নিঃস্ব নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ব্যক্তি, পারিবারিক সহিংসতার শিকার হওয়া ব্যক্তি, জাতিগত সংখ্যালঘু, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, কুষ্ঠরোগী, ঝাড়ুদার এবং তথাকথিত নিম্নবর্ণের হরিজন সম্প্রদায়।

শেখ হাসিনা জানান, তারা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকেও সহায়তা দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে কক্সবাজারে ১৩৯টি বহুতল ভবনে ৫ হাজার জলবায়ু-শরণার্থী পরিবারের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগে কর্মসংস্থান ও থাকার জন্যে শহরগুলোতে গৃহহীন লোকের ছুটে আসার দৃশ্য অতি পরিচিত ছিল। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে এই প্রবণতা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, এসব লোক নিজস্ব এলাকাতেই এখন স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মডেল অনুসরণ করছি। এই মডেল একজন পুনর্বাসিত ব্যক্তিকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল এবং স্ব-মর্যাদাপূর্ণ করার জন্যে একটি সামগ্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করে। প্রকল্পটি স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের জন্যে জমি ও বাড়ির সমান মালিকানা নিশ্চিত করে। বাসস্থান দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা এবং এটি অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা পূরণের সুযোগ সৃষ্টি করে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে আমরা দেখেছি যে, একটি বাড়ি শুধু থাকার জায়গা নয় বরং আবাসন নিরাপত্তা একজন ব্যক্তির অর্থনৈতিক মুক্তিকে ত্বরান্বিত এবং মর্যাাদার সঙ্গে বসবাসে অনুপ্রাণিত করে।

তিনি বলেন, আমরা জমি ও ঘরের পাশাপাশি শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানোরও সফল ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্যে আমরা নিকটবর্তী কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে যুক্ত করেছি। নারী ও শিশুরা ৩০ ধরনের ঔষধ বিনামূল্যে পাচ্ছে। বসতবাড়িতে বাগান করা, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ উৎপাদনসহ ক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কার্যক্রম নারীদের নেতৃত্বে চলছে। এসব কর্মকাণ্ড এই উদ্যোগকে টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব করেছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মালওয়াইয়ের প্রেসিডেন্ট ড. লাজারাস ম্যাককার্থি চাকভেরা, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী সঞ্জয় ভার্মা, জাতিসংঘে স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের স্থায়ী প্রতিনিধি মিশেল ম্লিনার এবং আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি। © প্রকাশক কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত -২০২২

You cannot copy content of this page